রেকর্ডগড়া বোলিং করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। বিপিএল ইতিহাসে তার ১৯ রানে ৭ উইকেটের স্পেল সবচেয়ে সেরা এবং স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এর অবস্থান তৃতীয়। বিপিএলে আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে দুর্বার রাজশাহীর হয়ে তাসকিন ওই নজির গড়েছেন। পরে রেকর্ডগড়া স্পেল উৎসর্গ করেছেন নিজের সন্তানকে।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন বলেন, ‘আসলে দিনশেষে আমি যখন ভালো করি বা উইকেট পাই আমার ছেলে আমার বাবা– এরা অনেক খুশি হয়। ডেফিনেটলি ওদের সাপোর্টটাও অনুপ্রেরণা দেয়। যেদিন আমি ভালো বোলিং (ভালো) করতে পারি না, সেদিন তাসফিন (ছেলে) অনেক মন খারাপ করে। আজকে আমি শিওর ও অনেক খুশি। তো এটা তাসফিনের জন্যই।’
নিজের বোলিং স্পেল ইতিহাসে স্থান পাওয়ার প্রসঙ্গে দুর্বার রাজশাহীর এই পেসার বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে আমরা ফাস্ট বোলাররা ইম্প্রুভ করতেছি এবং অনেকেই রেকর্ড গড়ছে দেশে বা বাইরে। এটা খুবই ভালো সাইন। আমাদের যে উন্নতির ধারাবাহিকতা আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। আমার স্বপ্ন লেজেন্ডারি ফাস্ট বোলার হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করা। যাতে অনেক উইকেট পাই এবং অনেক কন্ট্রিবিউশন থাকে দেশকে জেতানোর পেছনে, আমারও এটাই লক্ষ্য থাকে।’
টস হেরে আগে ফিল্ডিং পাওয়ায়ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তাসকিন, ‘আমাদেরও প্ল্যান ছিল টস জিতলে আমরা বোলিং নেব। কারণ আজকের কন্ডিশনটা ঠান্ডা আর একটু হেজি ছিল। তো ভাবছিলাম বল মুভমেন্ট থাকবে এবং আমাদের জন্য ভালো হইছে। ওরা হয়তো ভাবছে ফ্ল্যাট উইকেটে ওরা বড় টোটাল করবে, পরে যা হইছে আলহামদুল্লিলাহ। সব বোলাররাই টস জিতলে বোলিং নিয়ে বাড়তি অ্যাডভান্টেজ নিতে চায়। তো আমরা উইকেটের হেল্পও পাইছি, এক্সিকিউশনও করতে পারছি।’
তাসকিনের ৭ উইকেটের নেপথ্যে মজার এক ঘটনা!
বিপিএল ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগারের মালিক এখন তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভার বল করে ১৯ রান খরচায় নিয়েছেন ৭ উইকেট। শাকিব খানের দল ঢাকা ক্যাপিটালসের ব্যাটিং অর্ডার একাই বল হাতে ধসিয়ে দিয়েছেন এই বোলার।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা তাসকিনের কাছে জানতে চাওয়া হয় ৭ উইকেট পাবেন, সেটা ভেবেছিলেন কি না। জবাবে তাসকিন বললেন, ‘ভাবছি, আসলে না ভাবলে হতো না। হ্যাঁ, উইকেট একটু লাকেরও ফেভার হতে হয়। কিন্তু আমি খুশি যে আমি আলহামদুল্লিলাহ বোলিংয়ে যেটা করতে চাচ্ছি এক্সকিউট সেটা হচ্ছে। আসলে ভালো বোলিং করতে পারাটাই ইম্পর্ট্যান্ট। উইকেট তো অনেক সময় দুইটা কম হয়, দুইটা বেশি হয়। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’
‘আজকে একটা মজার বিষয় ছিল যে আমাদের টিমের মেসেয়ার আনোয়ার বলছিল যে ভাইয়া তুমি আজকে চার উইকেট পাবা। চাচ্ছিস যেহেতু আল্লাহর কাছে বেশিই চা , ৮ উইকেটও তো হইতে পারে। ৭ উইকেট পেয়ে গেছি আজকে। আলহামদুল্লিলাহ সো ফার আমি আমার প্ল্যান এক্সিকিউট করতে পারছি এবং জিতছি। ভালো লাগতেছে।’
৮ উইকেটও হতে পারত কি না প্রশ্নে তাসকিন বললেন, ‘না আসলে লোভে যাই নাই। বেশি লোভে গেলে দেখা গেল হাফ ভলি হতে পারত। তখন বলছি একেকটা ওয়ান বোলারের টাইমে আমি ক্লিয়ার ছিলাম। সিচুয়েশন অনুযায়ী কী করা দরকার এবং সেটা করতে পারছি। ভালো লাগছে যে না যখনই ক্যাপ্টেন আমাকে ট্রাস্ট করে নিয়ে আসছি, ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারছি আলহামদুল্লিলাহ।’
এছাড়া নিজের অনুভূতি নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘ভাইয়া আসলে- ফাইফার তো যে কোনো ফরম্যাটে অনেক স্পেশাল। কারণ অনেকবার তিন উইকেট, চার উইকেট পাইছি কিন্তু উইকেটের সঙ্গে লাকও লাগে পাঁচটা পাইতে। আলহামদুল্লিলাহ এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। যেহেতু আমি বাংলাদেশের ছেলে বিপিএলের হিস্টোরিতে আমার একটা নাম থাকবে খেলা ছাড়ার পরও , এটা আমার জন্য একটা প্রাউড মোমেন্ট।’
The post রেকর্ডগড়া বোলিং সন্তানকে উৎসর্গ করলেন তাসকিন appeared first on Bangladesher Khela.