নতুন একটা বছর, নতুন একটা দিন। এ যেনো নতুন করে শীতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতি। বছরের শুরুতেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। প্রকৃতি যেনো তার শীতল রূপ দেখাচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ ওঠানামা করার সঙ্গে বাড়ছে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাসে জবুথবু খুলনার উপকূল। শীতের তীব্রতায় জনজীবন
এদিকে কুয়াশায় ধোঁয়াচ্ছন্ন পরিবেশে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। শ্রম বিক্রির অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
খুলনা শহরে ডাক্তার দেখাতে আসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আকলিমা খাতুন বলেন, শীত প্রতিবছরই পড়ে। এইবার মনে হচ্ছে শীত একটু বেশিই। তবে হ্যা শহরের তুলনায় গ্রামের শীত আরও বেশি। যার জন্য স্কুলের ছাত-ছাত্রীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সাব্বির টি স্টলের চা বিক্রেতা মো. সাব্বির বলেন, শীতে লোক তেমন বাইরে বের হচ্ছে না। বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কম। তিনদিনের ঠান্ডায় জনজীবন যেনো স্থবির হয়ে আছে। শীতের পাশাপাশি বাতাস এবং অতিরিক্ত কুয়াশা। সব মিলিয়ে যেনো নাজেহাল অবস্থা।
ইজিবাইকচালক মামুন বলেন, ঠান্ডার কারণে অটো চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। তারপরও জীবন তো থেমে থাকবে না। ঠান্ডা বাতাস বইছে। গতকাল শুক্রবার রোদের দেখা পায়নি। তবে গতকালের তুলনায় আজকে শীত কম আছে। এই শীতে প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বের হচ্ছে না। যার জন্য রাস্তায় যাত্রী কম। যদি যাত্রী পেলে গাড়ি ভাড়ার টাকা জমা দিয়ে বাজার করতে পারবো। আর তা না হলে বিপাকে পড়তে হবে।
শহরের চেয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে শীতের তীব্রতা বেশি। অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। তীব্র শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে দরিদ্র পরিবারের বৃদ্ধ ও শিশুরা। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর দিন কাটছে তাদের।
বটিয়াঘাটার কৃষক নিমাই ঘোষ বলেন, খুব ভোর বেলাই উঠেছি এই কুয়াশায় শীতে। কথা আড়াই যাচ্ছে। তাও তো কালকে দিন বেলা সূর্য মোটেও বের হইনি কালকে সারাদিন কষ্ট হয়েছিল খুব। আর আমাদের চেয়ে কষ্ট হয়েছিলো যারা ধান রুচ্ছে । এরা সারাদিন কাঁদার মধ্যে গা হাত-পায়ে কাঁদা পানি। কালকে শীতের মধ্যে সারাদিন কাজ করেছি আর আজকেও সূর্য বের হয়েছিল। আবার ঢেঁকে গেছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া যশোরে ১১ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি, মোংলা, সাতক্ষীরা ও কয়রায় ১৩ ডিগ্রি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার থেকে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এ দিন খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ শনিবার খুলনার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দুপুরে সূর্য দেখা মিলেছে।
খুলনা গেজেট/এমএম
The post শীতের তীব্রতায় জবুথবু খুলনা appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.