3:46 am, Wednesday, 8 January 2025

নলছিটিতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে সাড়ে ১০লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

নলছিটি(ঝালকাঠি) প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা অনুরাগ পৌরীপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে ১০লাখ ৫২হাজার টাকা আত্মসাতসহ দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকবৃন্দ নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এ অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, নলছিটি উপজেলার ৪৮নং অনুরাগ গৌরীপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের টাকা আত্মসাত করেছেন। বরাদ্দের টাকায় উন্নয়নমূলক কোন কাজই বাস্তবায়ন করেননি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-৪) এর আওতায় মাইনর ক্যাটাগরির মেরামতের জন্য ২লাখ টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ক্ষুদ্র মেরামত দুই লাখ টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মাইনর মেরামত দুই লাখ টাকা, রুটিন মেরামত ৮০হাজার টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা ও প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। যার ছিটেফোটা কাজও তিনি না করিয়ে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে শুধুমাত্র কয়েকটি বেঞ্চে রং এবং একটি শহীদ মিনার তৈরী করা হয়েছে। এর বাইরে কোন কাজ করানো হয়নি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অনুকূলে অনেক বরাদ্দ এসেছে যা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কোন কিছুই করা হয়নি। বিদ্যালয়ের সভাপতি লাভলু’র সাথে যোগসাজসে সম্পুর্ণ টাকাই তিনি আত্মসাত করেছেন।

অভিযোগে বিদ্যালয়ে তার উপস্থিতি অনিয়মিত বলে দাবি করা হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ে মাঝে মাঝে উপস্থিত হলেও প্রায় সময়ই আওয়ামীলীগের নেতার দোহাই দিয়ে শহরে ঘুরাঘুরি করতেন। এতে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত করতেন তিনি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান চলে ঢিলেঢালাভাবে। এতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হবার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটে। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সভাপতির যোগসাজসে ওয়াশবøক নির্মাণ করেছেন। খেলার মাঠে ওয়াশবøক নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সুষ্ঠ তদন্ত স্বাপেক্ষে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান অভিভাবকরা।

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ২০১৮সনের জুন মাসে আমি এ স্কুলে যোগদান করি। এরপর থেকে যত বরাদ্ধ আসছে তার কাজ করেছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও অবকাঠামোর পরিবর্তন করেছি। আগামী ডিসেম্বরের ৩১তারিখ চাকুরীর মেয়াদ শেষ হবে। বদলী জনিত একটি বিষয়ে আমাকে হয়রাণি করার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ে এক মেয়াদে সভাপতি ছিলাম। ওই সময়ে বরাদ্দ যা আসছে তার সঠিকভাবে কাজ করানো হয়েছে। যার ভাউচার প্রধান শিক্ষকের কাছে সংরক্ষিত আছে। আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যা আদৌ সত্য নয় বলেও দাবী করেন তিনি।

এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

The post নলছিটিতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে সাড়ে ১০লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ! appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

নলছিটিতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে সাড়ে ১০লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

Update Time : 06:07:29 pm, Monday, 6 January 2025

নলছিটি(ঝালকাঠি) প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা অনুরাগ পৌরীপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে ১০লাখ ৫২হাজার টাকা আত্মসাতসহ দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকবৃন্দ নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এ অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, নলছিটি উপজেলার ৪৮নং অনুরাগ গৌরীপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের টাকা আত্মসাত করেছেন। বরাদ্দের টাকায় উন্নয়নমূলক কোন কাজই বাস্তবায়ন করেননি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-৪) এর আওতায় মাইনর ক্যাটাগরির মেরামতের জন্য ২লাখ টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ক্ষুদ্র মেরামত দুই লাখ টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মাইনর মেরামত দুই লাখ টাকা, রুটিন মেরামত ৮০হাজার টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪হাজার টাকা, প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্লিপ বরাদ্দ ৫০হাজার টাকা ও প্রাকপ্রাথমিক ১০হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। যার ছিটেফোটা কাজও তিনি না করিয়ে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে শুধুমাত্র কয়েকটি বেঞ্চে রং এবং একটি শহীদ মিনার তৈরী করা হয়েছে। এর বাইরে কোন কাজ করানো হয়নি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অনুকূলে অনেক বরাদ্দ এসেছে যা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কোন কিছুই করা হয়নি। বিদ্যালয়ের সভাপতি লাভলু’র সাথে যোগসাজসে সম্পুর্ণ টাকাই তিনি আত্মসাত করেছেন।

অভিযোগে বিদ্যালয়ে তার উপস্থিতি অনিয়মিত বলে দাবি করা হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ে মাঝে মাঝে উপস্থিত হলেও প্রায় সময়ই আওয়ামীলীগের নেতার দোহাই দিয়ে শহরে ঘুরাঘুরি করতেন। এতে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত করতেন তিনি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান চলে ঢিলেঢালাভাবে। এতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হবার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটে। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সভাপতির যোগসাজসে ওয়াশবøক নির্মাণ করেছেন। খেলার মাঠে ওয়াশবøক নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সুষ্ঠ তদন্ত স্বাপেক্ষে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান অভিভাবকরা।

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ২০১৮সনের জুন মাসে আমি এ স্কুলে যোগদান করি। এরপর থেকে যত বরাদ্ধ আসছে তার কাজ করেছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও অবকাঠামোর পরিবর্তন করেছি। আগামী ডিসেম্বরের ৩১তারিখ চাকুরীর মেয়াদ শেষ হবে। বদলী জনিত একটি বিষয়ে আমাকে হয়রাণি করার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ে এক মেয়াদে সভাপতি ছিলাম। ওই সময়ে বরাদ্দ যা আসছে তার সঠিকভাবে কাজ করানো হয়েছে। যার ভাউচার প্রধান শিক্ষকের কাছে সংরক্ষিত আছে। আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যা আদৌ সত্য নয় বলেও দাবী করেন তিনি।

এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

The post নলছিটিতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে সাড়ে ১০লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ! appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.