নিজস্ব প্রতিনিধি:
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এক পক্ষের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারী) দুপুর ১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে- সরকার পতনের নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এডহক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রনালয়। মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এডহক কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করা না হলেও প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেককে চাপ প্রয়োগ করে সভাপতি পদের জন্য কাগজপত্র জমা দিতে যান শাখাওয়াত হোসেন মনির। এ সময় তার পক্ষে প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করেন বরিশাল জেলা বাস্তুহারা দলের সভাপতি মিলন মুন্সি, সদর উপজেলা বাস্তুহারা দলের আহবায়ক শাহ আলম হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আশ্রাফসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন। চাপের মুখে পড়ে নিজের সম্মান বাচাতে সেই কাগজপত্র জমা নেন প্রধান শিক্ষক। এরআগে সকালে পূর্নিমা নামের এক প্রার্থী কাগজপত্র জমা দিতে চাইলে জমা নেননি প্রধান শিক্ষক। তবে প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করে প্রতিপক্ষ কাগজপত্র দিয়েছেন এমন সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যলয়ে ছুটে যান পূর্নিমার স্বজনরা ও স্থানীয়রা। যাওয়া মাত্র তাদের উপর চড়াও হন মিলন ও শাহ আলম বাহিনী। এ সময় তারা বলেন- মনির ব্যতিত এই বিদ্যালয়ে কেউ এডহক কমিটির সভাপতি হতে পারবে না, কারো কাগজ জমা নিলে প্রধান শিক্ষককে এখানে চাকরি করতে দেবো না। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
এদিকে খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে যান সংবাদকর্মীরা। তাদের দেখে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন মিলন ও শাহ আলম বাহিনী। প্রতিপক্ষকে তর্কে কুপকাত করতে না পেরে ধাক্কা-ধাক্কি শুরু করেন তারা। এমনকি সংবাদকর্মীদের লাঞ্ছিত করেন শাহ আলম। পরে ওই বাহিনীর তোপের মুখে পড়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয় সংবাদকর্মীরা।
বরিশাল জেলা বাস্তুহারা দলের সভাপতি মিলন মুন্সি বলেন- এই স্কুলে আমাদের লোক ব্যতিত অন্য কেউ কমিটিতে আসতে পারবে না। আমরা বিএনপি করেছি, আমাদের উপরে কথা বলার লোক এই অঞ্চলে নাই।
শাহ আলম হাওলাদার বলেন- আমি প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করেছি তাতে কি হয়েছে? কে আছে আমাকে জিজ্ঞেস করার? আমাদের উপরে কথা বলবে কে?
আপনি সংবাদকর্মীদের লাঞ্ছিত করেছেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- এখানে সাংবাদিকদের কাজ কি? এই এলাকায় সাংবাদিকতা চলবে না।
সভাপতি প্রার্থী শাখাওয়াত হোসেন মনির বলেন- আমার সাথে আসা লোকজন এ রকম ঘটনা ঘটবে আমি বুঝতে পারিনি।
সভাপতি প্রার্থী পূর্নিমা মুঠোফোনে বলেন- আমি চাই গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এডহক কমিটি গঠন করা হোক। এখানে চাপ প্রয়োগ করার কিছু নেই। আমরা কমিটি নিয়ে কোন প্রকার ঝামেলা চাই না। এরকম পরিস্থিতি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কাম্য নয়। এতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়। প্রধান শিক্ষকের সাথে ঘটা ঘটনার নিন্দা জানাই।
প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন- আমি এখনো এডহক কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নেইনি। হঠাৎ একদল লোক এসে আমাকে চাপ প্রয়োগ করে সভাপতি পদের জন্য কাগজপত্র জমা নিতে বাধ্য করে। আমি কাগজপত্র জমা নিতে না চাইলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। পরে সম্মান বাচাতে কাগজ জমা রাখি। এরআগে সকালে আরেক প্রার্থী কাগজপত্র জমা দিতে চাইলে জমা নেইনি। তারা চলে গেলেও পরে আবার বিদ্যালয়ে আসলে উভেয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়।
The post চরকাউয়ায় স্কুলের এডহক কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের হট্টগোল appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.