10:03 pm, Saturday, 11 January 2025

তামিমের বিদায়ে সতীর্থদের আবেগঘন বার্তা

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি করে তামিম নিজের যাত্রার শেষ টানার ঘোষণা দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তার এই সিদ্ধান্ত সতীর্থদের মধ্যে আবেগঘন প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তারা তামিমকে শুভকামনা জানিয়েছেন এবং তার অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তামিমের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ বছর ১০৬টি ম্যাচে একসঙ্গে খেলা সৌম্য সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, নতুন শুরুর জন্য শুভকামনা। অবসর মানে শেষ নয়, এটা সুন্দর এক নতুন অধ্যায়ের শুরুও। সামনের অভিযাত্রা উপভোগের। অবসর শুভ হোক, ভাই। মাঠে আপনাকে মিস করব।

তামিমের আগে জাতীয় দলে আসা মুশফিকুর রহিম তামিমের বিদায়বেলায় নিজের অনুভূতি শেয়ার করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘তামিম, তোমার এই অবসরের সময়ে তোমার অর্জনের জন্য আমি কতটা গর্বিত, সেটি বলছি। দোস্ত, তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অসাধারণ এক দূত এবং বিশ্বমানের ব্যাটার। দুবাইয়ে আমাদের জুটিটি আমি সব সময় মনে রাখব, বিশেষ করে তুমি যখন ভাঙা আঙুল নিয়ে ব্যাট করেছিলে। এতে দেশের প্রতি তোমার নিবেদন ও খেলার প্রতি ভালোবাসাটা বোঝা যায়। অবসর শুভ হোক, দোস্ত। মাঠে তোমাকে মিস করব। তবে ক্রিকেটের মাধ্যমে অসাধারণ এক বন্ধু পাওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

তামিমের সঙ্গে ৩৮ ইনিংসে ব্যাট করা মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, তামিম, দীর্ঘ এবং দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সুন্দর সব অর্জনের জন্য তোমাকে অনেক অভিনন্দন। তোমার অর্জন অনেক এবং বাংলাদেশ দলে অবদানও প্রচুর। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ দলের হয়ে এটাই আমাদের শেষবার একসঙ্গে ব্যাট করার ছবি (পোস্টের ছবি)। তোমার সঙ্গে খেলাটা ছিল আনন্দের এবং মাঠ ও মাঠের বাইরে অনেক স্মৃতি আমাদের। অবসর সুখের হোক এই কামনা করি এবং ভবিষ্যতের জন্যও শুভকামনা রইল। তোমার অবদান সব সময় মনে রাখা হবে।

জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও তামিমের অবসর ঘোষণায় ফেসবুকে বার্তা দেন। তিনি লিখেন, প্রিয় তামিম ভাই, আপনার নেয়া সিদ্ধান্তকে আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। ২০১৬ সালে আবাহনীর হয়ে প্রথমবার আপনার সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা থেকে শুরু করে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলার সুযোগ, আপনার কাছ থেকে শিখেছি অসংখ্য কিছু। আপনার ক্রিকেটীয় মেধা, সহ-খেলোয়াড়দের প্রতি আপনার যত্নশীলতা ও উদারতা আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে। আপনার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই আপনাকে ভাবতে হয়েছে, এবং সেটিকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। তবে ড্রেসিংরুমে এবং ২২ গজে আপনার সঙ্গ আমরা ভীষণভাবে মিস করব।

জাতীয় দলের বাইরে থাকা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম লিখেছেন, আপনার অবসরের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটল। দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে নিজের দক্ষতা, নিবেদন ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে আপনি এই খেলায় অমোচনীয় ছাপ রেখে গেলেন। বড় সেঞ্চুরি কিংবা চাপের মুখে দারুণ সব পারফরম্যান্সের অবদান আপনাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সত্যিকারের আইকন বানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে তামিম ইকবাল তার বিদায় বার্তায় লেখেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেক দিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ।

২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তামিমের। বাংলাদেশের জার্সিতে শেষ ওয়ানডে খেলেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের ঘরের মাঠ মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় টি টোয়েন্টিতে। দলের হয়ে সবশেষ ম্যাচ খেলেন ২০২০ সালে ৯ মার্চ ঘরের মাঠ মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়। ঘরের মাঠ মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল শেষ ম্যাচ খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে তামিম ৩৯১ ম্যাচ খেলেন (টেস্ট ৭০, ওয়ানডে ২৪৩ ও টি টোয়েন্টি ৭৮)। যথাক্রমে ৫ হাজার ১৩৪, ৮ হাজার ৩৫৭ ও ১ হাজার ৭৫৮ রান করেন। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তার সেঞ্চুরি সংখ্যা ২৫টি। যার মধ্যে টেস্টে ১০, ওয়ানডেতে ১৪ ও টি টোয়েন্টিতে একটি।

The post তামিমের বিদায়ে সতীর্থদের আবেগঘন বার্তা appeared first on Bangladesher Khela.

Tag :

তামিমের বিদায়ে সতীর্থদের আবেগঘন বার্তা

Update Time : 04:07:25 pm, Saturday, 11 January 2025

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি করে তামিম নিজের যাত্রার শেষ টানার ঘোষণা দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তার এই সিদ্ধান্ত সতীর্থদের মধ্যে আবেগঘন প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তারা তামিমকে শুভকামনা জানিয়েছেন এবং তার অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তামিমের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ বছর ১০৬টি ম্যাচে একসঙ্গে খেলা সৌম্য সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, নতুন শুরুর জন্য শুভকামনা। অবসর মানে শেষ নয়, এটা সুন্দর এক নতুন অধ্যায়ের শুরুও। সামনের অভিযাত্রা উপভোগের। অবসর শুভ হোক, ভাই। মাঠে আপনাকে মিস করব।

তামিমের আগে জাতীয় দলে আসা মুশফিকুর রহিম তামিমের বিদায়বেলায় নিজের অনুভূতি শেয়ার করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘তামিম, তোমার এই অবসরের সময়ে তোমার অর্জনের জন্য আমি কতটা গর্বিত, সেটি বলছি। দোস্ত, তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অসাধারণ এক দূত এবং বিশ্বমানের ব্যাটার। দুবাইয়ে আমাদের জুটিটি আমি সব সময় মনে রাখব, বিশেষ করে তুমি যখন ভাঙা আঙুল নিয়ে ব্যাট করেছিলে। এতে দেশের প্রতি তোমার নিবেদন ও খেলার প্রতি ভালোবাসাটা বোঝা যায়। অবসর শুভ হোক, দোস্ত। মাঠে তোমাকে মিস করব। তবে ক্রিকেটের মাধ্যমে অসাধারণ এক বন্ধু পাওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

তামিমের সঙ্গে ৩৮ ইনিংসে ব্যাট করা মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, তামিম, দীর্ঘ এবং দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সুন্দর সব অর্জনের জন্য তোমাকে অনেক অভিনন্দন। তোমার অর্জন অনেক এবং বাংলাদেশ দলে অবদানও প্রচুর। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ দলের হয়ে এটাই আমাদের শেষবার একসঙ্গে ব্যাট করার ছবি (পোস্টের ছবি)। তোমার সঙ্গে খেলাটা ছিল আনন্দের এবং মাঠ ও মাঠের বাইরে অনেক স্মৃতি আমাদের। অবসর সুখের হোক এই কামনা করি এবং ভবিষ্যতের জন্যও শুভকামনা রইল। তোমার অবদান সব সময় মনে রাখা হবে।

জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও তামিমের অবসর ঘোষণায় ফেসবুকে বার্তা দেন। তিনি লিখেন, প্রিয় তামিম ভাই, আপনার নেয়া সিদ্ধান্তকে আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। ২০১৬ সালে আবাহনীর হয়ে প্রথমবার আপনার সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা থেকে শুরু করে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলার সুযোগ, আপনার কাছ থেকে শিখেছি অসংখ্য কিছু। আপনার ক্রিকেটীয় মেধা, সহ-খেলোয়াড়দের প্রতি আপনার যত্নশীলতা ও উদারতা আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে। আপনার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই আপনাকে ভাবতে হয়েছে, এবং সেটিকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। তবে ড্রেসিংরুমে এবং ২২ গজে আপনার সঙ্গ আমরা ভীষণভাবে মিস করব।

জাতীয় দলের বাইরে থাকা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম লিখেছেন, আপনার অবসরের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটল। দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে নিজের দক্ষতা, নিবেদন ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে আপনি এই খেলায় অমোচনীয় ছাপ রেখে গেলেন। বড় সেঞ্চুরি কিংবা চাপের মুখে দারুণ সব পারফরম্যান্সের অবদান আপনাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সত্যিকারের আইকন বানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে তামিম ইকবাল তার বিদায় বার্তায় লেখেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেক দিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ।

২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তামিমের। বাংলাদেশের জার্সিতে শেষ ওয়ানডে খেলেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের ঘরের মাঠ মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় টি টোয়েন্টিতে। দলের হয়ে সবশেষ ম্যাচ খেলেন ২০২০ সালে ৯ মার্চ ঘরের মাঠ মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়। ঘরের মাঠ মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল শেষ ম্যাচ খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে তামিম ৩৯১ ম্যাচ খেলেন (টেস্ট ৭০, ওয়ানডে ২৪৩ ও টি টোয়েন্টি ৭৮)। যথাক্রমে ৫ হাজার ১৩৪, ৮ হাজার ৩৫৭ ও ১ হাজার ৭৫৮ রান করেন। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তার সেঞ্চুরি সংখ্যা ২৫টি। যার মধ্যে টেস্টে ১০, ওয়ানডেতে ১৪ ও টি টোয়েন্টিতে একটি।

The post তামিমের বিদায়ে সতীর্থদের আবেগঘন বার্তা appeared first on Bangladesher Khela.