বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর জ্বর আর বমি বমি ভাব। সারাক্ষণ কাঁশি লেগে থাকে। মুখে রুচি নেই। মাথা ঘুরানো, মারাত্মক শারীরিক দুর্বলতা খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রমসহ নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে থাকে ৩০ বছর বয়সী মাহাতাবের শরীরে। অবশেষে শেখ আবু নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানালেন তার দু’টি কিডনিই সম্পূর্ণরূপে অকেজো হয়ে গেছে। দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। এজন্য খরচ হবে ২৫/৩০ লাখ টাকা। ভ্যানচালক দরিদ্র পিতা সুলতান বিশ্বাসের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। এ কারণে অর্থাভাবে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে মাহাতাব বিশ্বাস।
মাহাতাব তেলিগাতী খানজাহান আলী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের এক সময়ের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ভালো ফুটবল খেলতেন। বাঁচার আকুতি জানিয়ে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
জানা যায়, তেলিগাতী খানজাহান আলী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর দারিদ্রতার কারণে পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। ভ্যান চালক দরিদ্র পিতাকে সহযোগিতা করতে শুরু করেন পুরনো কাপড়ের ব্যবসা। স্ত্রী আর এক বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে থাকেন আড়ংঘাটা থানাধীন তেলিগাতী পাঁকারমাথা পিতা মাতার সংসারে।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১০/১২ আগে ভর্তি হন আবু নাসের হাসপাতালে। গত সোমবার হাসপাতালে থেকে রিলিজ দিলে স্বজনদের সাথে বাড়িতে চলে আসেন। বর্তমানে সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। প্রতিবার ডায়ালাইসিসে খরচ হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে কোন রকমভাবে ছেলের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন সুলতান বিশ্বাস। ছেলের চিকিৎসার টেনশন এবং হাসপাতালে দৌঁড়াদৌঁড়ির কারণে এখন ভ্যান চালাতে পারছেন না। সংসারে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। খেয়ে না খেয়ে চলছে ৪ সদস্যের পরিবার।
মাহাতাবের স্ত্রী রিক্তা মোবাইল ফোনে খুলনা গেজেটকে বলেন, আমার স্বামীর দুইটা কিডনিই সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে। কিডনির কার্যকারিতা এক শতাংশও ভালো নেই। আবু নাসের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা বলেছেন দ্রুত তার কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। গত সোমবার হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়েছে। বর্তমানে সে বাড়িতে আছে। দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। রক্তের ক্রিয়েটিনিনও অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজনের সহযোগিতা ছাড়া হাঁটতে চলতে, বসতে উঠতে পারে না। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারে না। মাজার পিছনে অসম্ভব রকমের ব্যথা।
চিকিৎসকরা বলেছেন, তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে খুব দ্রুত অন্ততঃ একটা কিডনি হলেও প্রতিস্থাপন করতে হবে। আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ কিডনি দিলে সে ক্ষেত্রে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ৬/৭ লাখ টাকা খরচ হবে। আর নতুন কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ হবে ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা। এত টাকা খরচ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সমাজের বিত্তবানরা যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে আমার স্বামীকে কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সুস্থ করা সম্ভব।
তাকে এর চিকিৎসার জন্য সাহায্য পাঠানোর
মাহাতবের কিডনি প্রতিস্থাপনে পাশে দাঁড়াতে 01938513442 মোবাইল নাম্বারে সহযোগিতার আকুতি জানিয়েছে তার পরিবার।
খুলনা গেজেট/এইচ
The post দরিদ্র মাহাতাবের দু’টি কিডনি অকেজো, বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আকুতি appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.