খুলনা নগরীতে সেমাবার ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেলা সাড়ে ১২টায় পুরাতন রেলস্টেশন এলাকায় নগরীর ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মানিক হাওলাদারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। বিকালে তিনি মারা যান।
সন্ধ্যা ৬ টায় নগরীর আযমখান কমার্স কলেজের ভেতরে সন্ত্রাসীরা নওফেল নামের এক যুবককে কুপিয়ে তার আঙুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর বয়রা শশ্মানঘাট এলাকায় সজীব শিকদার নামের আরেক যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
এসব ঘটনায় দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ।
যুবদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, আটক ২
দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুলনা মহানগরীর ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মানিক হাওলাদার (৩৫) নিহত হয়েছেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা মহানগরীর পুরাতন রেলস্টেশন রোড রেলওয়ে মসজিদের পেছনে মানিককে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। বিকেলে খুমেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মানিক রেলওয়ে হাসপাতাল রোডের মনছুর হাওলাদারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ সাজ্জাদসহ দুইজনকে আটক করেছে।
হাসপাতাল ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওএমএস এর চাল বিতরণে লাইন দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক নারীর সঙ্গে মানিকের তর্ক হয়। ওই তর্কের জের ধরে পরে মারামারি হয়। এসময় কয়েকজন মানিককে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। বুকের মাঝখানে এক জায়গায় এবং পেটের বা-পাশের সাইডে এক জায়গায় ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হন তিনি৷ স্থানীয় লোকজন তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন৷ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। ঢাকায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলে খুমেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, নগরীর পুরাতন রেলওয়ে রোড এলাকায় ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি মানিক হাওলাদারকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলায় হরিণটানায় যুবক আহত
প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সজীব শিকদার (২৯) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বয়রা চেয়াম্যান ভিটা শশ্মানঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবককে রাতে চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে। সজীব শিকদার নগরীর জিরোপয়েন্ট বিসমিল্লাহ সড়ক এলাকার জনৈক জালাল শিকদরের ছেলে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিণটানা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ খায়রুল বাসার খুুলনা গেজেটকে বলেন, সজীব হরিণটানা থানা এলাকার সন্ত্রাসী কালা লাভলু ও সাগর গ্রুপের সদস্য ছিল। এ গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্ধ চলছিল গত কয়েকদিন ধরে। যার শিকার হয় সজীব শিকদার। রাতে তাকে বয়রা চেয়ারম্যান ভিটা শশ্মানঘাট এলাকায় ডেকে নেওয়া হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগে সন্ত্রাসীরা তার ওপর অতর্কিত চাপাতি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। তার দু’হাতে এলোপাথাড়িভাবে কোপাতে থাকে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
সন্ত্রাসীর চাপাতির আঘাতে যুবকের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন
সন্ত্রাসীর চাপাতির আঘাতে মো: নওফেল নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬ টায় নগরীর আযমখান কমার্স কলেজের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত যুবক টিবি ক্রস রোড এলাকার মাহবুবুর রহমান লিটুর ছেলে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
স্থানীয়রা জানায় সন্ধ্যা ৬ টার দিকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সন্ত্রাসী নওফেলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আত্মরক্ষার জন্য সে কলেজের ভেতর প্রবেশ করে। সন্ত্রাসীরা তার পিছু ধাওয়াা দেয়। এ সময়ে তাদের কাছে থাকে চাপতি দিয়ে নওফেলের বাম হাত ও হাটুতে আঘাত করে। তাদের চাপাতির আঘাতে তার বাম হাতের একটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা ঘটনাটি জেনে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আহত যুবক নওফেল সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় খুলনা সদর থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
খুলনা গেজেট/সাগর/হিমালয়
The post খুলনায় ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে তিন সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ১ গুরুতর জখম ২ appeared first on খুলনা গেজেট | সবার আগে সঠিক খবর.