12:44 pm, Friday, 24 January 2025

বরগুনায় ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কার

বরগুনা প্রতিনিধি:

ধর্ষণ প্রতিরোধে এক অভিনব ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন এক ক্ষুদে বিজ্ঞানী। ধর্ষণ চেষ্টাকালে বার্তা পৌঁছে যাবে স্বজনদের কাছে। এমনই এক জুতার আবিষ্কার করেন বরগুনার এভারগ্রিন হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। বরগুনার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হাবিবুল্লাহ কালামের ছেলে আবদুল্লাহ আল সাইম (নিনাত)।

জানা যায়, ধর্ষণ প্রতিরোধে এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী আবিষ্কার করলেন এক অত্যাশ্চর্য পদ্ধতি। যা ধর্ষণ চেষ্টাকালে ভিকটিমের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবে ধর্ষণ চেষ্টার বার্তা। জুতার মাঝে তিনি বসিয়ে দিয়েছেন এমন এক জিপিএস ট্রাকার এবং ২৫০ ভোল্টের ইলেকট্রিক শক গান যা হেনস্থার শিকার নারীকে রক্ষা করবে ধর্ষকের হাত থেকে।

শুধু জুতা নয়, তিনি তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আবিষ্কার করেন, বিমান, ড্রোন, অন্ধ মানুষের জন্য চশমা, লঞ্চ, রাডারসহ অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস।

ছোটবেলা থেকেই কোনোকিছু তৈরি বা আবিষ্কারের দিকে ছিল ওর প্রবল আগ্রহ। ধর্ষণ প্রতিরোধে ওর এই আবিষ্কারটি রীতিমতো তাক লাগিয়েছে স্বজনদের।

আবদুল্লাহ আল সাইম (নিনাত) জানান, এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্লাস থ্রি থেকে। ইউটিউবে একটি ইলেকট্রিক হিটার বানানো দেখার পর থেকে এই পথচলা শুরু। ছোট ছোট বিভিন্ন মোটর, পাখা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতাম। শুরুতে মা-বাবা সাপোর্ট করতেন না। ধীরে ধীর বুঝতে পেরে তারা আমার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ক্লাস থ্রি থেকে বিভিন্ন জিনিস যেমন ফ্যান, জাহাজ, বিমান, ড্রোন, অন্ধ মানুষের জন্য চশমা, লঞ্চ, রাডারসহ অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস  তৈরি করতাম। আস্তে আস্তে বড় হলাম, অভিজ্ঞতা বাড়ল। অনলাইন থেকে জিনিসপত্র কিনে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতাম তখন। যখন ক্লাস সেভেনে উঠলাম তখন হঠাৎ করে একদিন ড্রোন বানানোর চিন্তা আসে মাথায়। যদিও তার আগে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেছিলাম। ড্রোনের চিন্তা আসার পর অনলাইন থেকে গুগল, ইউটিউব থেকে  তথ্য সংগ্রহ করে ধীরে ধীরে এগোতে থাকি। কাজ শুরু করে প্রথমবার ব্যর্থ হই। ড্রোন তৈরি করার সময় পর পর সাত বারই ব্যর্থ হই। এরপর অষ্টমবারে প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ড্রোন তৈরি করতে সফল হই। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় প্লেন, লঞ্চ, রাডার, ব্লাইন্ড সানগ্লাস, ভেকু, ফোন কল ফায়ার এলার্ম, গ্যাস লিকেজ এলার্ম। এরকম বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রজেক্ট আমি তৈরি করেছি। বর্তমানে  আমার সবচেয়ে বড় যে প্রজেক্ট তা হলো, ধর্ষণ প্রতিরোধ থেকে নারীদের রক্ষা পেতে জুতা আবিষ্কার করি।

আবদুল্লাহ আল সাইম (নিনাত) এর বাবা হাবিবুল্লাহ কালাম জানান, আমি একজন প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমার ছেলে ছোটবেলা এসব চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক সময় বিদ্যুতের শক খেয়েছে এবং আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করতে হয়েছে। তখন আমি রাগারাগি করতাম অযথা টাকা-পয়সাগুলো নষ্ট করার জন্য। এরপর থেকে অনেক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি তৈরি করে আমাদের অবাক করে দিয়েছে। এক সময় আমারও ভালোলাগা শুরু হলো ওর এসব প্রতিভা দেখে। সরকারের উদ্দেশে বলতে চাচ্ছি, সরকারিভাবে যদি আমার ছেলে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেলে ও আরও ভালো কিছু করে দেখাবে এবং উপকূলীয় জেলা বরগুনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

The post বরগুনায় ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কার appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

বরগুনায় ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কার

Update Time : 10:08:11 pm, Wednesday, 9 October 2024

বরগুনা প্রতিনিধি:

ধর্ষণ প্রতিরোধে এক অভিনব ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন এক ক্ষুদে বিজ্ঞানী। ধর্ষণ চেষ্টাকালে বার্তা পৌঁছে যাবে স্বজনদের কাছে। এমনই এক জুতার আবিষ্কার করেন বরগুনার এভারগ্রিন হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। বরগুনার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হাবিবুল্লাহ কালামের ছেলে আবদুল্লাহ আল সাইম (নিনাত)।

জানা যায়, ধর্ষণ প্রতিরোধে এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী আবিষ্কার করলেন এক অত্যাশ্চর্য পদ্ধতি। যা ধর্ষণ চেষ্টাকালে ভিকটিমের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবে ধর্ষণ চেষ্টার বার্তা। জুতার মাঝে তিনি বসিয়ে দিয়েছেন এমন এক জিপিএস ট্রাকার এবং ২৫০ ভোল্টের ইলেকট্রিক শক গান যা হেনস্থার শিকার নারীকে রক্ষা করবে ধর্ষকের হাত থেকে।

শুধু জুতা নয়, তিনি তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আবিষ্কার করেন, বিমান, ড্রোন, অন্ধ মানুষের জন্য চশমা, লঞ্চ, রাডারসহ অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস।

ছোটবেলা থেকেই কোনোকিছু তৈরি বা আবিষ্কারের দিকে ছিল ওর প্রবল আগ্রহ। ধর্ষণ প্রতিরোধে ওর এই আবিষ্কারটি রীতিমতো তাক লাগিয়েছে স্বজনদের।

আবদুল্লাহ আল সাইম (নিনাত) জানান, এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্লাস থ্রি থেকে। ইউটিউবে একটি ইলেকট্রিক হিটার বানানো দেখার পর থেকে এই পথচলা শুরু। ছোট ছোট বিভিন্ন মোটর, পাখা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতাম। শুরুতে মা-বাবা সাপোর্ট করতেন না। ধীরে ধীর বুঝতে পেরে তারা আমার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ক্লাস থ্রি থেকে বিভিন্ন জিনিস যেমন ফ্যান, জাহাজ, বিমান, ড্রোন, অন্ধ মানুষের জন্য চশমা, লঞ্চ, রাডারসহ অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস  তৈরি করতাম। আস্তে আস্তে বড় হলাম, অভিজ্ঞতা বাড়ল। অনলাইন থেকে জিনিসপত্র কিনে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতাম তখন। যখন ক্লাস সেভেনে উঠলাম তখন হঠাৎ করে একদিন ড্রোন বানানোর চিন্তা আসে মাথায়। যদিও তার আগে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেছিলাম। ড্রোনের চিন্তা আসার পর অনলাইন থেকে গুগল, ইউটিউব থেকে  তথ্য সংগ্রহ করে ধীরে ধীরে এগোতে থাকি। কাজ শুরু করে প্রথমবার ব্যর্থ হই। ড্রোন তৈরি করার সময় পর পর সাত বারই ব্যর্থ হই। এরপর অষ্টমবারে প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ড্রোন তৈরি করতে সফল হই। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় প্লেন, লঞ্চ, রাডার, ব্লাইন্ড সানগ্লাস, ভেকু, ফোন কল ফায়ার এলার্ম, গ্যাস লিকেজ এলার্ম। এরকম বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রজেক্ট আমি তৈরি করেছি। বর্তমানে  আমার সবচেয়ে বড় যে প্রজেক্ট তা হলো, ধর্ষণ প্রতিরোধ থেকে নারীদের রক্ষা পেতে জুতা আবিষ্কার করি।

আবদুল্লাহ আল সাইম (নিনাত) এর বাবা হাবিবুল্লাহ কালাম জানান, আমি একজন প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমার ছেলে ছোটবেলা এসব চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক সময় বিদ্যুতের শক খেয়েছে এবং আমাকে আর্থিক সহযোগিতা করতে হয়েছে। তখন আমি রাগারাগি করতাম অযথা টাকা-পয়সাগুলো নষ্ট করার জন্য। এরপর থেকে অনেক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি তৈরি করে আমাদের অবাক করে দিয়েছে। এক সময় আমারও ভালোলাগা শুরু হলো ওর এসব প্রতিভা দেখে। সরকারের উদ্দেশে বলতে চাচ্ছি, সরকারিভাবে যদি আমার ছেলে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেলে ও আরও ভালো কিছু করে দেখাবে এবং উপকূলীয় জেলা বরগুনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

The post বরগুনায় ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কার appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.