7:06 pm, Wednesday, 19 February 2025
Aniversary Banner Desktop

‘আমার একটাই ছেলে, সে নেই এখন কার দিকে তাকিয়ে থাকবো’

নগর প্রতিনিধি:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সন্তানদের হত্যার বিচার ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন ভুক্তভোগিদের পরিবার। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্র জনতা ও শহীদ পরিবার বরিশাল বিভাগের ব্যানারে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় বরিশাল প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ সরকার সাব্বির বলেন, ২০১৮ সাল থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের প্রথম থেকে আমরা ছিলাম, এখনও আছি। ২০২৪ সালে সেটি কোটা সংস্কার থেকে গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। 

তিনি বলেন, ২৪ এর আন্দোলনে গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে দুই মাস ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলাম। এরপর বরিশালে এসে এখানকার হতাহতদের বিষয়ে খোঁজ নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয়ে আন্দোলনে শহীদ বরিশালের সন্তানদের পরিবারের যেমন কেউ সেইভাবে খোঁজ নেয়নি, তেমনি আহতদেরও সেইভাবে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়নি। 

তিনি বলেন, আমরা বরিশাল বিভাগ ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করছি।যেখানে বরিশাল জেলায় ৩০ জন শহীদ ও ৪ শতাধিক আহতের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি, তবে কাজটি শেষ না হওয়ায় এখনও সঠিক তথ্য প্রকাশ সম্ভব হয়নি। 

এসময় শহীদের পরিবারের জন্য কিছু দাবি তুলে ধরেন তিনি।  দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়ার দাবির পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাটের নামকরণ তাদের নামে করার দাবি জানাচ্ছি। শহীদদের পরিবারকে এককালীন অর্থ প্রদান ও মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক শহীদ পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া। এছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা করা এবং সারাজীবন এটি অব্যাহত রাখা, প্রয়োজনে দেশের বাহিরে নিয়ে আহতদের চিকিৎসা করানোর দাবি জানাচ্ছি। 

সেইসঙ্গে আহতদের প্রত্যেককে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা, মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা, এককালীন অর্থের ব্যবস্থা করা এবং আহতদের রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। 

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় গুলিতে নিহত সেলিম তালুকদার রমজান (২৮) এর পিতা সুলতান তালুকদার ও মা সেলিনা আক্তার বলেন, আমাদের ছেলে চাকরি করলেও সে মৃত্যুর আগে বলেছে আবু সাঈদ জীবন দিতে পারলে আমি কেন পারবো না। আর সত্যি সত্যি সে জীবন দিলো। 

সেলিমের মা সেলিনা আক্তার বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে বাড্ডার ব্রাক ইউনিভার্সিটির সামনে গুলিতে গুরুতর আহত হন আমার ছেলে। এরপর সেখানকার লোকজন তাকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখান থেকে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে গেলেও আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে কেউ ভর্তি নেয়নি। পরে চাকরিজীবী পরিচয়ে ভর্তি করি। সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সাথে যখন পাঞ্জা লড়ছিল তখন শত চেষ্টা করেও আমরা বাঁচাতে পারিনি। আমার ছেলেও গেল, সবই গেল। 

তিনি বলেন, ছেলেকে বাঁচাতে যখন কেউ পাশে ছিল না, তখন ধার দেনা করতে হয়েছে। কিন্তু একমাত্র অবলম্বনকে হারিয়ে এখন বৃদ্ধ বয়সে সেই দেনার টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো বুঝতে পারছি না। আমার একটাই ছেলে, সে নাই এখন কার দিকে তাকিয়ে থাকবো। 

তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে ছেলে যে কষ্ট পেয়েছে তাতে মৃত্যুর পর কষ্ট না দেয়ার জন্য ময়নাতদন্ত করতে চাইনি। অনেকে মামলা দিতে বলেছিল কিন্তু হয়রানি হবো বিধায় করিনি, কিন্তু আল্লাহর কাছে ঠিকই কেস করেছি। তবে তাই বলে কারও কাছে কি কোন বিচার বা ভালো কিছু পাওয়ার আশা করতে পারবো না। আমি আমার ছেলেসহ সকল শহীদ ও আহতদের সবার পক্ষে সরকারের কাছে বর্বোরিচিত ওই ঘটনার বিচার চাই এবং সবার খোঁজখবর যেন সরকার নেয়, প্রয়োজন অনুযায়ী যেন তাদের পাশে দাঁড়ায় এই আমার চাওয়া। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্য শহীদ ও আহতদের পরিবারের স্বজনরাও আক্ষেপ করেন, তাদের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেইভাবে খোঁজখবর না নেয়ায়। সেইসঙ্গে বরিশালের সন্তান যারা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি জানান।

The post ‘আমার একটাই ছেলে, সে নেই এখন কার দিকে তাকিয়ে থাকবো’ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.

Tag :

ndax login

https://ndaxlogi.com

latitude login

https://latitude-login.com

phantom wallet

https://phantomwallet-us.com

phantom

atomic wallet

atomic

https://atomikwallet.org

jupiter swap

jupiter

https://jupiter-swap.com

https://images.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fsecuxwallet.us%2F

secux wallet

secux wallet

secux wallet connect

secux

https://secuxwallet.com

jaxx wallet

https://jaxxwallet.live

jaxxliberty.us

gem visa login

jaxx wallet

jaxx wallet download

https://jaxxwallet.us

toobit-exchange.com Toobit Exchange | The Toobit™ (Official Site)

secuxwallet.com SecuX Wallet - Secure Crypto Hardware Wallet

jaxxliberty.us Jaxx Liberty Wallet | Official Site

‘আমার একটাই ছেলে, সে নেই এখন কার দিকে তাকিয়ে থাকবো’

Update Time : 02:07:27 pm, Wednesday, 23 October 2024

নগর প্রতিনিধি:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সন্তানদের হত্যার বিচার ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন ভুক্তভোগিদের পরিবার। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্র জনতা ও শহীদ পরিবার বরিশাল বিভাগের ব্যানারে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় বরিশাল প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ সরকার সাব্বির বলেন, ২০১৮ সাল থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের প্রথম থেকে আমরা ছিলাম, এখনও আছি। ২০২৪ সালে সেটি কোটা সংস্কার থেকে গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। 

তিনি বলেন, ২৪ এর আন্দোলনে গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে দুই মাস ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলাম। এরপর বরিশালে এসে এখানকার হতাহতদের বিষয়ে খোঁজ নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয়ে আন্দোলনে শহীদ বরিশালের সন্তানদের পরিবারের যেমন কেউ সেইভাবে খোঁজ নেয়নি, তেমনি আহতদেরও সেইভাবে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়নি। 

তিনি বলেন, আমরা বরিশাল বিভাগ ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করছি।যেখানে বরিশাল জেলায় ৩০ জন শহীদ ও ৪ শতাধিক আহতের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি, তবে কাজটি শেষ না হওয়ায় এখনও সঠিক তথ্য প্রকাশ সম্ভব হয়নি। 

এসময় শহীদের পরিবারের জন্য কিছু দাবি তুলে ধরেন তিনি।  দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়ার দাবির পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাটের নামকরণ তাদের নামে করার দাবি জানাচ্ছি। শহীদদের পরিবারকে এককালীন অর্থ প্রদান ও মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক শহীদ পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া। এছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা করা এবং সারাজীবন এটি অব্যাহত রাখা, প্রয়োজনে দেশের বাহিরে নিয়ে আহতদের চিকিৎসা করানোর দাবি জানাচ্ছি। 

সেইসঙ্গে আহতদের প্রত্যেককে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা, মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা, এককালীন অর্থের ব্যবস্থা করা এবং আহতদের রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। 

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় গুলিতে নিহত সেলিম তালুকদার রমজান (২৮) এর পিতা সুলতান তালুকদার ও মা সেলিনা আক্তার বলেন, আমাদের ছেলে চাকরি করলেও সে মৃত্যুর আগে বলেছে আবু সাঈদ জীবন দিতে পারলে আমি কেন পারবো না। আর সত্যি সত্যি সে জীবন দিলো। 

সেলিমের মা সেলিনা আক্তার বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে বাড্ডার ব্রাক ইউনিভার্সিটির সামনে গুলিতে গুরুতর আহত হন আমার ছেলে। এরপর সেখানকার লোকজন তাকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখান থেকে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে গেলেও আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে কেউ ভর্তি নেয়নি। পরে চাকরিজীবী পরিচয়ে ভর্তি করি। সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সাথে যখন পাঞ্জা লড়ছিল তখন শত চেষ্টা করেও আমরা বাঁচাতে পারিনি। আমার ছেলেও গেল, সবই গেল। 

তিনি বলেন, ছেলেকে বাঁচাতে যখন কেউ পাশে ছিল না, তখন ধার দেনা করতে হয়েছে। কিন্তু একমাত্র অবলম্বনকে হারিয়ে এখন বৃদ্ধ বয়সে সেই দেনার টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো বুঝতে পারছি না। আমার একটাই ছেলে, সে নাই এখন কার দিকে তাকিয়ে থাকবো। 

তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে ছেলে যে কষ্ট পেয়েছে তাতে মৃত্যুর পর কষ্ট না দেয়ার জন্য ময়নাতদন্ত করতে চাইনি। অনেকে মামলা দিতে বলেছিল কিন্তু হয়রানি হবো বিধায় করিনি, কিন্তু আল্লাহর কাছে ঠিকই কেস করেছি। তবে তাই বলে কারও কাছে কি কোন বিচার বা ভালো কিছু পাওয়ার আশা করতে পারবো না। আমি আমার ছেলেসহ সকল শহীদ ও আহতদের সবার পক্ষে সরকারের কাছে বর্বোরিচিত ওই ঘটনার বিচার চাই এবং সবার খোঁজখবর যেন সরকার নেয়, প্রয়োজন অনুযায়ী যেন তাদের পাশে দাঁড়ায় এই আমার চাওয়া। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্য শহীদ ও আহতদের পরিবারের স্বজনরাও আক্ষেপ করেন, তাদের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেইভাবে খোঁজখবর না নেয়ায়। সেইসঙ্গে বরিশালের সন্তান যারা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি জানান।

The post ‘আমার একটাই ছেলে, সে নেই এখন কার দিকে তাকিয়ে থাকবো’ appeared first on Amader Barisal – First online Newspaper of Greater Barisal – Stay with Barisal 24×7.