10:03 am, Thursday, 19 December 2024

উপজেলা পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি

লাইট হাউসের প্রকল্প পরিচিতি সভা

স্টাফ রিপোর্টার: জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে বিচারপ্রার্থী হিসেবে যারা আসেন- তাদের বেশির ভাগ অভিযোগ আসে- পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, খোরপোশ, অভিভাবকত্ব বিষয়ে। এর পাশাপাশি বাল্যবিবাহ, জমি-জমা সংক্রান্তসহ নানা রকম অভিযোগ নিয়েও আসেন বিচারপ্রার্থীরা। এখানে এমন মানুষও আসেন, যাদের আদালতে মামলা চালানোর সক্ষমতা নেই।

অসচ্ছল, অসহায় এসব মানুষকে সরকারি খরচে মামলা চালাতে সহযোগিতা করে থাকে জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে বিচার প্রার্থীদের আবেদনের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি কার্যালয়ের সেবাও বাড়ছে।

এসব অভিযোগের মধ্যে বিবদমান পক্ষগুলোর আপসে জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায় করে দেয়া হয়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের সম্মেলন কক্ষে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির আয়োজিত আইনগত অধিকার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকল্প পরিচিতি সভায় এই দাবি জানান বক্তারা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইকবাল বাহার। এই প্রকল্প পরিচিতি বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্টে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লাইট হাউজ এনজিও’র প্রজেক্ট ম্যানেজার সিদ্দিকুল আলম মামুন।

লাইট হাউজ এনজিও’র চীফ এক্সিকিউটিভ হারুন-অর-রশিদ এর সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হামিদুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জমসেদ আলী, রাজশাহী জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. আরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. খায়রুল আলম, লাইট হাউজ এনজিও’র প্রজেক্ট অফিসার নাজমুন নাহার, লাইট হাউজ এনজিও’র উপজেলা কো-অর্ডিনেটর আব্দুল বারিক সরকার।

এছাড়াও সভায় জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন গণমাধ্যম কর্মী, হিজড়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানানো হয়, লাইট হাউজ একটি মানবাধিকার ও উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এটি দেশের গ্রামীণ ও শহুরে দরিদ্র, প্রান্তিক ও উচ্চ ঝুঁকির জনগোষ্ঠী, হিজড়া, আদিবাসীদের ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করছে।

আরো জানানো হয়েছে, ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহায়তায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর বাস্তবায়নে লাইট হাউজ আইন সহায়তা এ্যাকটিভিটি প্রকল্পটি বিভাগের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, ও নাটোর জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পটি গ্রহণের আগে দাতা সংস্থা ও লাইট হাউজ সংশ্লিষ্ট জেলাসমূহের বিভিন্ন ধরণের স্টেকহোল্ডারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। রাজশাহী বিভাগে মোট ৩ লাখ ৩৩ হাজার ১১ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছে যারা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

প্রকল্পটি বিশেষভাবে নারী, শিশুসহ দুর্বল ও প্রান্তিক গোষ্ঠী, জাতিগত এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, ট্রান্সজেন্ডার এবং ইন্টারসেক্স সম্প্রদায়, এসিড এবং অন্যান্য লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা এবং ট্রাফিকড ইন পারসনসকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হবে। প্রস্তাবিত এলাকার মধ্যে লাইট হাউজ পূর্বে একই ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ডের সুবিধাভোগীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

Tag :

উপজেলা পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি

Update Time : 04:06:28 am, Thursday, 19 December 2024

লাইট হাউসের প্রকল্প পরিচিতি সভা

স্টাফ রিপোর্টার: জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে বিচারপ্রার্থী হিসেবে যারা আসেন- তাদের বেশির ভাগ অভিযোগ আসে- পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, খোরপোশ, অভিভাবকত্ব বিষয়ে। এর পাশাপাশি বাল্যবিবাহ, জমি-জমা সংক্রান্তসহ নানা রকম অভিযোগ নিয়েও আসেন বিচারপ্রার্থীরা। এখানে এমন মানুষও আসেন, যাদের আদালতে মামলা চালানোর সক্ষমতা নেই।

অসচ্ছল, অসহায় এসব মানুষকে সরকারি খরচে মামলা চালাতে সহযোগিতা করে থাকে জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে বিচার প্রার্থীদের আবেদনের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি কার্যালয়ের সেবাও বাড়ছে।

এসব অভিযোগের মধ্যে বিবদমান পক্ষগুলোর আপসে জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায় করে দেয়া হয়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের সম্মেলন কক্ষে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির আয়োজিত আইনগত অধিকার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকল্প পরিচিতি সভায় এই দাবি জানান বক্তারা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইকবাল বাহার। এই প্রকল্প পরিচিতি বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্টে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লাইট হাউজ এনজিও’র প্রজেক্ট ম্যানেজার সিদ্দিকুল আলম মামুন।

লাইট হাউজ এনজিও’র চীফ এক্সিকিউটিভ হারুন-অর-রশিদ এর সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হামিদুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জমসেদ আলী, রাজশাহী জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. আরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. খায়রুল আলম, লাইট হাউজ এনজিও’র প্রজেক্ট অফিসার নাজমুন নাহার, লাইট হাউজ এনজিও’র উপজেলা কো-অর্ডিনেটর আব্দুল বারিক সরকার।

এছাড়াও সভায় জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন গণমাধ্যম কর্মী, হিজড়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানানো হয়, লাইট হাউজ একটি মানবাধিকার ও উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এটি দেশের গ্রামীণ ও শহুরে দরিদ্র, প্রান্তিক ও উচ্চ ঝুঁকির জনগোষ্ঠী, হিজড়া, আদিবাসীদের ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করছে।

আরো জানানো হয়েছে, ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহায়তায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর বাস্তবায়নে লাইট হাউজ আইন সহায়তা এ্যাকটিভিটি প্রকল্পটি বিভাগের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, ও নাটোর জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পটি গ্রহণের আগে দাতা সংস্থা ও লাইট হাউজ সংশ্লিষ্ট জেলাসমূহের বিভিন্ন ধরণের স্টেকহোল্ডারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। রাজশাহী বিভাগে মোট ৩ লাখ ৩৩ হাজার ১১ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছে যারা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

প্রকল্পটি বিশেষভাবে নারী, শিশুসহ দুর্বল ও প্রান্তিক গোষ্ঠী, জাতিগত এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, ট্রান্সজেন্ডার এবং ইন্টারসেক্স সম্প্রদায়, এসিড এবং অন্যান্য লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা এবং ট্রাফিকড ইন পারসনসকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হবে। প্রস্তাবিত এলাকার মধ্যে লাইট হাউজ পূর্বে একই ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ডের সুবিধাভোগীদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।